চা বাগান ভ্রমন । চায়ের রাজধানীতে আপনাকে স্বাগতম
চায়ের রাজধানীতে আপনাকে স্বাগতম। দুটি পাতা একটি কুঁড়ির দেশ শ্রীমঙ্গল।
সিলেট বিভাগের শ্রীমঙ্গল একটি উপজেলা সেখানে রয়েছে অসংখ্য চা বাগান। চারিদিকে অনেক
সবুজ গালিচার মতো চা বাগান থাকার কারনে শ্রীমঙ্গলকে চায়ের রাজধানী বলে পরিচিত। বেশিরভাগ
চা বাগান এই এলাকাতে। পাহাড়ী এলাকায় চা বাগান যেন সবুজের সমারোহ। চারিদিকে সবুজ আর
সবুজ। তাকালেই দেখা যায় সবুজ কার্পেটের মতো বিস্তির্ন এলাকা কোথাও পাহাড়ী উপত্যকা যেন
শিল্পির হাতে গড়া। সবুজ চায়ের বাগান মনের গ্লানি দূর করে দেয়। এরই মধ্যে দাঁড়িয়ে রয়েছে
অনেক ছায়াঘেরা গাছ সেগুলো রোদের উত্তপ্ত তাপ থেকে চা গাছকে সুরক্ষা করে। সৌন্দর্য্য
বৃদ্ধিতে তার অবদান অনেক। বেশিরভাগ চা বাগান গুলো ব্যক্তি মালিকানা। কমসংখ্যক সরকারী
চা বাগান। উভয় প্রতিষ্টানের চা বাগানে প্রবেশের কিছু নিয়ম নীতি রয়েছে। রাস্তার পাশে
বাগান গুলো সহজে ভ্রমন করতে পারবেন। পাশের চা বাগান গুলো তেমন আকর্ষন নয়। বেশি সাজানো
গোছানো নয় তাই এরকম সুন্দর হয় না। ভিতরে বেশিরভাগ চাবাগান সজ্জিত। সারা বছর সবুজ পাতা
থাকে। কারন তারা পানি সরবরাহ করে তাদের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য। কিন্তু এসব বাগান ভ্রমন
করতে হলে অনুমোদনের প্রয়োজন। যদি কারও পরিচিত লোক থাকে অফিস লেভেলে কর্মরত তাহলে অনুমতি
নেওয়া সহজ। তাছাড়া উচ্চ লেভেলে কর্মরত লোকের মাধ্যমে এর ব্যবস্থা করা যায়। বাংলাদেশের
সবচেয়ে বড় চা বাগান কোম্পানীদের মধ্যে ফিনলে প্রথম স্থানে আছে। তাদের বাগান গুলো খুবই
সুন্দর। সবুজ
সমারোহ হাতছানি দিয়ে ডাকছে। চারিদিক সবুজ আর সবুজ।
কোথাও সবুজ পাহাড়ি উপত্যকা আর কোথাও সবুজ কার্পেট এর মত চা বাগান। দেশের চায়ের চাহিদা মেটায় শ্রীমঙ্গলের ও সিলেটের চা। যারা এখানে
ভ্রমন করতে যায়, স্মৃতি হিসেবে চা কিনে নেয়। চা বাগানের সবুজ সমারোহ দেখতে হলে আপনাকে
অবশ্যই নির্দিষ্ট সময়ে যেতে হবে। এর বিশেষ সময় হলো মার্চ মাস থেকে শুরু করে অক্টোবর
মাস পর্যন্ত। এই সময় বর্ষাকাল থাকায় গাছে গাছে সবুজ পাতা দেখা যায়। চা বাগান ভ্রমন
করার পর আপনি চা তৈরিও দেখতে পারবেন। কিভাবে চা প্রক্রিয়াজাত করা হয় তা দেখে আপনি নিশ্চয়ই
আপ্লুত হবেন। প্রত্যেক কোম্পানীর চা তৈরীর মেশিন নাই। তাই তারা শুধু সংগৃহীত পাতা অন্য
কোম্পানীর কাছে বিক্রি করে। যে কোম্পানীর কারখানা আছে তারা প্রক্রিয়াজাত করে বিক্রি
করে। চা প্রসেসকালীন সময় চায়ের তাজা ঘ্রান আপনাকে মুগ্ধ করে ফেলবে। আপনি এই এলাকায়
নতুন হলে হয়তো ভালো চা বাগান কোথায় আছে, কিভাবে যেতে হয়, নাও জানতে পারেন। সেজন্য আপনাকে
ভ্রমন পেশায় জরিত কোন লোককে জিজ্ঞেস করলে সঠিক তথ্য পেতে পারেন। এই পেশা ছাড়া অন্য
লোককে প্রশ্ন করলে সে আপনাকে সঠিক পরামর্শ দিতে পারবে না। শ্রীমঙ্গলে কিছু পর্যটক গাইড
আছে যারা দীর্ঘদিন ধরে এই পেশায় আছেন তাদের জিজ্ঞেস করতে পারেন। অবশ্যই সঠিক পরামর্শ
দিবে। তাছাড়া কিছু পর্যটকদের ভ্রমন করানোর জন্য গাড়ী চালক আছেন তারাও আপনাকে নির্দিষ্ট
স্থানে নিয়ে যাবে। এইসব স্থান আগ থেকে পরিকল্পনা অনুযায়ী করে নিতে হবে। নতুবা বাগানের
ফ্যাক্টরি দেখা বা চা প্রক্রিয়াজাত করন কিভাবে করা হয় তা দেখতে পারবেন না।
তাছাড়া আপনার যদি কোন আত্মীয় বা বিস্বস্থ লোক বাগানে কর্মরত থাকেন
অথবা মালিকের সাথে সম্পর্ক থাকে আপনি বাগানের ভিতরে নিরাপদে তাদের বাংলোতে থাকতে পারেন।
বাংলোগুলো তৈরী করা হয় একটি আকর্ষনীয় স্থানে যেখান থেকে চা বাগানের সুন্দর দৃশ্য দেখতে
পারবেন। বাগানে থেকে আপনি চা শ্রমিকের জীবন যাত্রা দেখে ও আপনি আপনার ভ্রমনের দিনগুলো
আরো চমৎকার করে নিতে পারেন। চা শ্রমিক একটি উপজাতি হিসেবে ধরা হয় কারন তাদের পূর্বপুরুষ
ভারতের ঊরিষ্যা, বিহার, ত্রিপুরা ও আসাম রাজ্য থেকে এসেছিলেন। তারা এখন ও জানে যে তাদের
আদি নিবাস ভারত। চা শ্রমিকদের ভাষা ইন্দ-বাংলা তে মিশ্র হয়েছে। বেশিরভাগ শ্রমিকরাই
হিন্দু। যদিও তারা হিন্দু তাদের রীতিনীতি আলাদা। তাদের চা শ্রমিক গোত্রেই তাদের বিবাহ
বন্দন হয়।
·
আমাদের লেখাতে কোনও ভুল ভ্রান্তি থাকলে, আমাদের জানান।
আমরা সংশোধন করব। এই লেখাতে আপনার উপকৃত হলে অবশ্যই শেয়ার করবেন।
· ভ্রমন প্রেমীদের জন্য কিছু উপদেশ যা সবার জন্য মঙ্গল হবে। ভ্রমন করবেন নিরবে, উপভোগ করুন। পরিবেশ রক্ষার জন্য পলিথিন ও ময়লা আবর্জনা যেখানে সেখানে ফেলবেন না। কোন কিছু নষ্ট বা ক্ষয় ক্ষতি করবেন না। যত পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকবে তত সুন্দর থাকবে।
